পেন ড্রাইভের দাম ২০২৪ | ভালো পেন ড্রাইভ চেনার উপায়

পেন ড্রাইভের দাম

আজকের ডিজিটাল যুগে ডেটা সংরক্ষণ এবং ট্রান্সফারের জন্য পেন ড্রাইভ অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি মাধ্যম। এটি একটি পোর্টেবল ডিভাইস যা সহজেই বিভিন্ন ধরনের ডেটা যেমন ডকুমেন্ট, ছবি, ভিডিও এবং সফটওয়্যার ট্রান্সফার করতে ব্যবহার করা হয়। তবে বাজারে বিভিন্ন ক্ষমতার পেন ড্রাইভের দাম নিয়ে অনেকেরই আগ্রহ রয়েছে বিশেষ করে বাংলাদেশে। এই আর্টিকেলটিতে আমরা ২০২৪ সালের জন্য বিভিন্ন স্টোরেজ ক্ষমতার পেন ড্রাইভের দাম এবং এগুলাও কেনার সময় কোন বিষয়গুলো খেয়াল রাখা উচিত তা বিস্তারিত আলোচনা করব।

পেন ড্রাইভের দাম নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর

পেন ড্রাইভের দাম নির্ধারণে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর ভূমিকা পালন করে। মূলত পেন ড্রাইভের ব্র্যান্ড, স্টোরেজ ক্ষমতা, ডেটা ট্রান্সফার স্পিড এবং বাজারের সরবরাহ ও চাহিদা এই দামের ওপর প্রভাব ফেলে।

আরো পড়ুনঃ রয়েল এনফিল্ড বাংলাদেশে দাম কত 

  • ব্র্যান্ড: স্যামসাং, স্যানডিস্ক, এইচপি, এডাটা, কিংস্টন প্রভৃতি বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডের পেন ড্রাইভের দাম সাধারণত কিছুটা বেশি হয়।
  • স্টোরেজ ক্ষমতা: সাধারণত, স্টোরেজ ক্ষমতা যত বেশি দামও তত বেশি হয়। উদাহরণস্বরূপ ১৬ জিবি এবং ২৫৬ জিবি পেন ড্রাইভের মধ্যে দাম বেশ পার্থক্য দেখা যায়।
  • ডেটা ট্রান্সফার স্পিড: দ্রুত ডেটা ট্রান্সফার সুবিধাযুক্ত পেন ড্রাইভ যেমন USB 3.0 বা USB 3.1 এর দাম তুলনামূলক বেশি।
  • বাজারের অবস্থা: সময়ভেদে পেন ড্রাইভের দাম কমতে বা বাড়তে পারে যেমন প্রযুক্তির আপগ্রেড এবং সরবরাহের উপর নির্ভর করে।

১৬ জিবি পেন ড্রাইভের দাম ২০২৪

বাংলাদেশের বাজারে ১৬ জিবি পেন ড্রাইভ একটি জনপ্রিয় চাহিদাসম্পন্ন পণ্য। এর দাম সাধারনত কম থাকে এবং এটি দৈনন্দিন কাজের জন্য বেশ উপযোগী। ছোট ফাইল সংরক্ষণ এবং সাধারণ ডেটা ট্রান্সফার করার জন্য এটি একটি ভালো সমাধান।

দাম:

  • স্যামসাং: ৪৫০-৫৫০ টাকা।
  • কিংস্টন: ৪০০-৫০০ টাকা।
  • এইচপি: ৪২০-৫২০ টাকা।
  • এডাটা: ৪০০-৫০০ টাকা।

কেন কিনবেন: যারা সাধারণ ফাইল সংরক্ষণ করতে চান এবং বেশি স্টোরেজ প্রয়োজন নেই তাদের জন্য ১৬ জিবি একটি যথেষ্ট স্টোরেজ ক্ষমতা। কম দামে এর ব্যবহারিক সুবিধা বেশি হওয়ায় এটি স্টুডেন্ট এবং ছোটখাট কাজে ব্যবহারের জন্য আদর্শ।

৩২ জিবি পেন ড্রাইভের দাম ২০২৪

৩২ জিবি পেন ড্রাইভ হলো মাঝারি স্তরের স্টোরেজ যা সাধারণ ব্যবহারের জন্য অনেকটাই উপযুক্ত। এতে আরও বেশি ডেটা সংরক্ষণ এবং দ্রুত ট্রান্সফার সুবিধা পাওয়া যায়।

দাম:

  • স্যামসাং: ৬৫০-৮০০ টাকা।
  • কিংস্টন: ৬৫০-৭৫০ টাকা।
  • এইচপি: ৬৭০-৭৫০ টাকা।
  • এডাটা: ৬৫০-৭৫০ টাকা।

কেন কিনবেন: ৩২ জিবি পেন ড্রাইভ সাধারণ ফাইল সংরক্ষণ ছাড়াও ভিডিও এবং ছবি রাখার জন্য ভালোমানের একটি স্টোরেজ বিকল্প। এটির দামও ১৬ জিবির তুলনায় একটু বেশি হলেও দৈনন্দিন কাজের জন্য উপযুক্ত। কর্মক্ষেত্রে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি ভালো পছন্দ।

৬৪ জিবি পেন ড্রাইভের দাম ২০২৪

যারা আরও বেশি ডেটা সংরক্ষণ করতে চান এবং বড় ফাইলের সাথে কাজ করেন তাদের জন্য ৬৪ জিবি পেন ড্রাইভ কার্যকরী। এর মাধ্যমে ভিডিও, মিউজিক ফাইল বা অন্যান্য বড় আকারের ফাইল সংরক্ষণ করা যায়।

দাম:

  • স্যামসাং: ১০০০-১২০০ টাকা।
  • কিংস্টন: ৯৫০-১১৫০ টাকা।
  • এইচপি: ১০০০-১২০০ টাকা।
  • এডাটা: ৯৫০-১১৫০ টাকা।

কেন কিনবেন: যারা ফটোগ্রাফি, ভিডিও এডিটিং বা উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ডেটা নিয়ে কাজ করেন তাদের জন্য ৬৪ জিবি পেন ড্রাইভ একটি আদর্শ সমাধান। এতে আপনি অনেকগুলো বড় আকারের ফাইল সংরক্ষণ করতে পারেন যা পোর্টেবল স্টোরেজ হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর।

১২৮ জিবি পেন ড্রাইভের দাম ২০২৪

১২৮ জিবি পেন ড্রাইভ হলো উচ্চ ক্ষমতার একটি স্টোরেজ অপশন যা অফিসিয়াল কাজে বা ফিল্ম এডিটিং-এর মতো কাজে ব্যবহারের জন্য আদর্শ। এর মাধ্যমে বড় আকারের ফাইল সহজেই সংরক্ষণ করা সম্ভব।

দাম:

  • স্যামসাং: ১৮০০-২১০০ টাকা।
  • কিংস্টন: ১৭০০-২০০০ টাকা।
  • এইচপি: ১৮০০-২১০০ টাকা।
  • এডাটা: ১৭০০-১৯৫০ টাকা।

আরো পড়ুনঃ পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটের দাম কত 

কেন কিনবেন: ১২৮ জিবি পেন ড্রাইভের ব্যবহার ফ্রিল্যান্সার, গ্রাফিক্স ডিজাইনার এবং ফিল্ম এডিটিংয়ের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। যারা পেশাগত কাজে বিভিন্ন বড় বড় ফাইল হ্যান্ডেল করেন তাদের জন্য এটি আদর্শ এবং কেবলমাত্র তাদের জন্য উপযুক্ত যারা বড় ফাইল সংরক্ষণ করেন।

২৫৬ জিবি পেন ড্রাইভের দাম ২০২৪

উচ্চ ক্ষমতার জন্য ২৫৬ জিবি পেন ড্রাইভ ব্যবহার করা হয়। এটি উচ্চ স্তরের পেশাগত এবং ব্যক্তিগত কাজে অনেক কার্যকর।

দাম:

  • স্যামসাং: ৩২০০-৩৮০০ টাকা।
  • কিংস্টন: ৩০০০-৩৫০০ টাকা।
  • এইচপি: ৩২০০-৩৭০০ টাকা।
  • এডাটা: ২৯০০-৩৫০০ টাকা।

কেন কিনবেন: যারা উচ্চ ক্ষমতার এবং দ্রুতগতির ডেটা সংরক্ষণ ব্যবস্থা খুঁজছেন, তাদের জন্য ২৫৬ জিবি স্টোরেজের পেন ড্রাইভ খুবই উপযোগী। প্রায় সব ধরণের কাজের জন্য এটি ব্যবহার করা সম্ভব এবং বিভিন্ন ফাইল সংরক্ষণের জন্য এর স্টোরেজ ক্ষমতা পর্যাপ্ত।

ভালো পেন ড্রাইভ চেনার উপায়

বাংলাদেশের বাজারে ভালো মানের পেন ড্রাইভ খুঁজে বের করা সহজ কাজ নয় কারণ বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং ক্যাপাসিটির পেন ড্রাইভ রয়েছে। কিছু বিষয় বিবেচনা করলে ভালো মানের পেন ড্রাইভ চেনা সহজ হয়।

  • ব্র্যান্ড: স্যামসাং, স্যানডিস্ক, কিংস্টন, এইচপি – এগুলো বিশ্বের অন্যতম সেরা পেন ড্রাইভ ব্র্যান্ড। বিশ্বস্ত এবং গ্রাহক সমর্থন রয়েছে এমন ব্র্যান্ডের পেন ড্রাইভ বেছে নেওয়া ভালো।
  • ইউএসবি প্রোটোকল: ইউএসবি ৩.০ এবং ইউএসবি ৩.১ প্রযুক্তির পেন ড্রাইভগুলো ইউএসবি ২.০ এর চেয়ে দ্রুত এবং উন্নত। এজন্য যে পেন ড্রাইভে ইউএসবি ৩.০ বা ৩.১ আছে তা কিনলে ভালো হয়।
  • ওয়ারেন্টি: ভালো মানের পেন ড্রাইভ সাধারণত ১ থেকে ৫ বছরের ওয়ারেন্টি সহ আসে। ওয়ারেন্টি চেক করলে নকল পেন ড্রাইভ এড়ানো সহজ হয়।
  • রিড এবং রাইট স্পিড: রিড এবং রাইট স্পিড দেখে পেন ড্রাইভের মান সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। সাধারণত ১০০ এমবিপিএস এর উপরে রিড স্পিড যুক্ত পেন ড্রাইভগুলোকে দ্রুতগতি সম্পন্ন ধরা হয়।

অনলাইন এবং অফলাইন থেকে পেন ড্রাইভ কেনার সুবিধা ও অসুবিধা

পেন ড্রাইভ কিনতে হলে আপনি অনলাইন এবং অফলাইন দুটি মাধ্যমের যেকোনোটি বেছে নিতে পারেন। তবে প্রতিটির কিছু সুবিধা এবং অসুবিধা রয়েছে।

অনলাইন স্টোর থেকে কেনার সুবিধা

  • বেশি অপশন: অনলাইনে বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং স্টোরেজের পেন ড্রাইভ সহজেই দেখতে পারবেন।
  • কাস্টমার রিভিউ: অনলাইন স্টোরগুলিতে আগের ক্রেতাদের রিভিউ পড়ে নকল পণ্য এড়ানো সহজ।
  • ডিসকাউন্ট অফার: অনলাইন স্টোরে প্রায়ই ডিসকাউন্ট ও ফ্ল্যাশ সেল চলতে থাকে যা পেন ড্রাইভের দাম কমায়।

অনলাইন স্টোর থেকে কেনার অসুবিধা

  • ডেলিভারি টাইম: প্রোডাক্ট পৌঁছাতে সময় লাগে এবং সবসময় প্রত্যাশিত গুণমানের প্রোডাক্ট নাও পেতে পারেন।
  • নকল পণ্যের সম্ভাবনা: সবসময় যাচাই করা সম্ভব হয় না। বিশ্বাসযোগ্য স্টোর থেকে কেনা উত্তম।

অফলাইন স্টোর থেকে কেনার সুবিধা

  • সরাসরি যাচাই: পেন ড্রাইভের গুণমান, মডেল এবং ক্ষমতা যাচাই করে কেনা যায়।
  • তাৎক্ষণিক পাওয়া: ক্রয় করার পরপরই ব্যবহার করা সম্ভব।

অফলাইন স্টোর থেকে কেনার অসুবিধা

  • মুল্য ছাড়ের অভাব: অনলাইনের মতো বড় ডিসকাউন্ট সাধারণত অফলাইনে পাওয়া যায় না।
  • সীমিত অপশন: ছোট দোকান বা মার্কেটে সবসময় সব ব্র্যান্ডের পেন ড্রাইভ নাও পাওয়া যেতে পারে।

পেন ড্রাইভ কেনার সময় বিবেচ্য নিরাপত্তা বিষয়ক টিপস

অনেক সময় পেন ড্রাইভ কিনতে গিয়ে নকল পণ্যের ফাঁদে পড়া যায়। নকল পেন ড্রাইভ চিনতে হলে কিছু বিষয় মাথায় রাখা দরকার।

  • ব্র্যান্ড লোগো এবং প্যাকেজিং: মূল ব্র্যান্ডের পেন ড্রাইভে সাধারণত স্পষ্ট এবং মানসম্মত লোগো থাকে। যদি লোগো বা প্যাকেজিং অস্পষ্ট মনে হয় তাহলে সেটি নকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • ওয়ারেন্টি চেক করুন: অধিকাংশ বিশ্বস্ত ব্র্যান্ড ওয়ারেন্টি সহ পেন ড্রাইভ প্রদান করে। দোকানদার যদি ওয়ারেন্টি দিতে না চায় তবে সেটি নকল হতে পারে।
  • ভিত্তি মূল্য যাচাই করুন: বাজারে পেন ড্রাইভের গড় দাম সম্পর্কে ধারণা রাখুন এবং যদি কোনো ব্র্যান্ডের পেন ড্রাইভ অস্বাভাবিক কম দামে পাওয়া যায় তাহলে তা নকল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
  • মেমোরি টেস্টিং সফটওয়্যার: H2testw এবং FakeFlashTest এর মতো সফটওয়্যার দিয়ে পেন ড্রাইভ কিনে দ্রুত পরীক্ষা করা যায়।

২০২৪ সালের পেন ড্রাইভের দাম নিয়ে ভবিষ্যৎ প্রেডিকশন

প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে স্টোরেজ ডিভাইসের দামও কমছে। ভবিষ্যতে বাজারে নতুন নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব হওয়ায় পেন ড্রাইভের দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন পেন ড্রাইভের জন্য কিছুটা বেশি খরচ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

নতুন প্রযুক্তি এবং ইউএসবি টাইপ সি: ইউএসবি টাইপ সি এবং দ্রুতগতি সম্পন্ন ইউএসবি ৪.০ প্রযুক্তি যুক্ত পেন ড্রাইভের দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নতুন টেকনোলজি প্রাথমিকভাবে একটু বেশি দামে আসতে পারে।

আরো পড়ুনঃ হেলিকপ্টারের দাম কত 

ফ্ল্যাশ মেমোরি দাম কমা: সময়ের সাথে সাথে ফ্ল্যাশ মেমোরি চিপের দাম কমছে যা ভবিষ্যতে কম দামি পেন ড্রাইভ কেনার সুযোগ দেবে।

পেন ড্রাইভের সাধারণ সমস্যা এবং এর সমাধান

পেন ড্রাইভ ব্যবহারের সময় কিছু সাধারণ সমস্যার সম্মুখীন হওয়া যেতে পারে। কিছু সহজ টিপস মেনে চললে এসব সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

  • ডেটা করাপশন: মাঝে মাঝে পেন ড্রাইভে ডেটা করাপশন হতে পারে। ফরম্যাটিংয়ের মাধ্যমে বা মেমোরি চেক সফটওয়্যার ব্যবহার করে সমস্যা সমাধান করা যায়।
  • নন-রেসপন্সিভ পেন ড্রাইভ: পেন ড্রাইভ নন-রেসপন্সিভ হলে প্রথমে অন্য কোনো পোর্টে পেন ড্রাইভ লাগিয়ে চেষ্টা করতে হবে। যদি কাজ না হয় তবে ফরম্যাট করা দরকার।
  • ভাইরাস সমস্যা: পেন ড্রাইভে অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করে রাখতে পারেন। নিয়মিত স্ক্যান করলে ভাইরাস সমস্যা এড়ানো সহজ হয়।

উপসংহার এবং পরবর্তী পদক্ষেপ

বাংলাদেশের বাজারে বিভিন্ন ধরনের এবং ক্ষমতার পেন ড্রাইভ পাওয়া যায়। এই লেখায় আমরা বিভিন্ন স্টোরেজ ক্ষমতার পেন ড্রাইভের দাম, কেনার সময় খেয়াল রাখার বিষয়গুলো এবং ভালো মানের পেন ড্রাইভ চেনার উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। পেন ড্রাইভ কেনার আগে পণ্যটির ব্র্যান্ড, ওয়ারেন্টি এবং স্পেসিফিকেশন ভালোভাবে যাচাই করার পরামর্শ দিচ্ছি। যদি এই লেখাটি সহায়ক মনে হয় তবে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং আপনার কোনো মতামত বা অভিজ্ঞতা থাকলে আমাদের কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন। পেন ড্রাইভ কেনার Daraz এর লিঙ্ক

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *