কারেন্টের চুলার দাম কত ২০২৪

কারেন্টের চুলার দাম কত

বাংলাদেশে গৃহস্থালী কাজের ক্ষেত্রে প্রযুক্তির প্রয়োগ দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে রান্নার ক্ষেত্রে কারেন্টের চুলা এখন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্যাসের সমস্যা এবং পরিবেশ বান্ধব থাকার কারণে অনেকেই এখন কারেন্টের চুলা ব্যবহারের দিকে ঝুঁকছেন। কারেন্টের চুলা ব্যবহার করা সহজ, সাশ্রয়ী এবং দ্রুত রান্নার জন্য উপযোগী। ২০২৪ সালের কারেন্টের চুলার দাম কত এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মডেল সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

কারেন্টের চুলার দাম কত ২০২৪

২০২৪ সালে কারেন্টের চুলার দাম কত তা বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং মডেলের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত একটি সাধারণ মানের কারেন্টের চুলার দাম ১৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। উন্নত মানের এবং বিভিন্ন ফিচার সম্বলিত মডেলের দাম ১০০০০ টাকার উপরে যেতে পারে। কারেন্টের চুলার দাম নির্ধারণে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হলো ব্র্যান্ডের মান, মডেলের বৈশিষ্ট্য এবং বাজারের চাহিদা। ২০২৪ সালে কারেন্টের চুলার দাম সম্পর্কে কিছু সাম্প্রতিক তথ্য পাওয়া যায় যা বাজারের প্রবণতা ও পরিবর্তন সম্পর্কে ভালো ধারণা দেয়।

আরএফএল কারেন্টের চুলার দাম

আরএফএল বাংলাদেশের একটি জনপ্রিয় ব্র্যান্ড যা বিভিন্ন ধরনের গৃহস্থালী পণ্য তৈরি করে। আরএফএল এর কারেন্টের চুলার দাম সাধারণত ২০০০ টাকা থেকে ৬০০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে। আরএফএল কারেন্টের চুলাগুলোর মধ্যে বেশ কিছু উন্নত বৈশিষ্ট্য থাকে যেমন অটো শাট ডাউন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং বিভিন্ন সাইজের অপশন। আরএফএল এর চুলাগুলো দীর্ঘস্থায়ী এবং সহজেই ব্যবহারযোগ্য হওয়ার কারণে অনেকের পছন্দ।

মডেল দাম
RFL Vision Infrared Cooker 40A3 (HiLife) ৪৭০০ টাকা।
RFL Vision Induction Cooker VSN-1206-Eco ৩৫৬০ টাকা।
RFL Vision Infrared Cooker RE VSN XI-30A3 ৩৭৫০ টাকা।
RFL Vision Infrared Cooker -VSN-XI-26 ৪৫০০ টাকা।

আরএফএল এর চুলাগুলোতে উন্নতমানের হিটিং উপাদান ব্যবহার করা হয় যা রান্নার সময় কমিয়ে আনে এবং বিদ্যুৎ খরচ কমায়। এই চুলাগুলোর ডিজাইন ও নির্মাণ মান এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য উপযোগী। তাছাড়া আরএফএল চুলাগুলোতে সেফটি ফিচারও থাকে যা দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করে।

ওয়ালটন কারেন্টের চুলার দাম

ওয়ালটন বাংলাদেশের অন্যতম একটি শীর্ষস্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড। ওয়ালটন কারেন্টের চুলার দাম ২৫০০ টাকা থেকে ৮০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। ওয়ালটন এর কারেন্টের চুলাগুলোতে সাধারণত উচ্চ ক্ষমতার হিটার, অটো কাট অফ এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকে। ওয়ালটন চুলাগুলোর নির্মাণ মান ও ডিজাইন খুবই উন্নত যা গৃহস্থালীর কাজকে আরও সহজ করে তোলে।

মডেল দাম
WHP-SMH15 2,000 টাকা।
WHP-DAMH22 3,000 টাকা।
WIR-BS20 3,890 টাকা।
HEAT MASTER ELITE 4,090 টাকা।
WI-COOK MASTER 4,090 টাকা।
WI-F15 (INDUCTION COOKER) 4,590 টাকা।
WI-STANLEY 20 5,290 টাকা।
WIR-KS20 5,590 টাকা।

চুলাগুলোর মধ্যে কিছু বিশেষ ফিচার রয়েছে যেমন ডিজিটাল ডিসপ্লে, বিভিন্ন কুকিং মোড এবং টাইমার। এই ফিচারগুলো রান্নাকে আরও সহজ এবং সাশ্রয়ী করে তোলে। এছাড়া ওয়ালটন এর চুলাগুলোর ওয়ারেন্টি সুবিধাও রয়েছে যা গ্রাহকদের জন্য একটি বাড়তি নিরাপত্তা প্রদান করে।

ভিশন কারেন্টের চুলার দাম

ভিশন ব্র্যান্ডও বাংলাদেশের বাজারে একটি জনপ্রিয় নাম। ভিশন কারেন্টের চুলার দাম সাধারণত ২০০০ টাকা থেকে ৭০০০ টাকার মধ্যে থাকে। ভিশন চুলাগুলোতে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ, শক্তিশালী হিটার এবং বিভিন্ন সাইজের অপশন পাওয়া যায়। এই ব্র্যান্ডের চুলাগুলো ব্যবহারে নিরাপদ ও সহজ হওয়ায় গৃহিণীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।

মডেল দাম
Vision Induction Cooker VISION-XI-211 ৩৪৮৫ টাকা।
VISION Induction Cooker VISION-1206 Eco ৩১৯০ টাকা।
VISION Induction Cooker VISION-1204 Border Eco ৩৭৮০ টাকা।
Vision Induction Cooker RE-VISION-XI-1201-Eco ৩১৯০ টাকা।

ভিশন চুলাগুলোর মধ্যে উন্নতমানের কুকিং প্লেট এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকে যা রান্নাকে নিরাপদ এবং কার্যকর করে তোলে। তাছাড়া ভিশন চুলাগুলোর ডিজাইন খুবই আর্কষণীয় যা রান্নাঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়।

কিয়াম কারেন্টের চুলার দাম

কিয়াম ব্র্যান্ডের কারেন্টের চুলাগুলোর দাম ২০০০ টাকা থেকে ৬০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। কিয়াম চুলাগুলোতে সাধারণত উন্নত হিটার, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং নিরাপত্তা ফিচার থাকে। কিয়াম এর চুলাগুলো দ্রুত তাপমাত্রা বাড়ানোর ক্ষমতা রাখে এবং বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে বাজারে ভাল চাহিদা রয়েছে।

মডেল দাম
Kiam Infrared Cooker H-66 Silver ৪৩৫০ টাকা।
Kiam Infrared Cooker H-88 ৪৫০০ টাকা।
Kiam Infrared Cooker H-11 ৪৫০০ টাকা।
Kiam Induction Cooker H-22 Premium ৪৫৫০ টাকা।
Kiam Infrared Cooker H-66 Gold ৪৬০০ টাকা।

কিয়াম চুলাগুলোর মধ্যে রয়েছে উন্নতমানের হিটিং উপাদান, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং সেফটি ফিচার যা রান্নাকে আরও সহজ এবং নিরাপদ করে তোলে। তাছাড়া কিয়াম এর চুলাগুলোর সাশ্রয়ী মূল্যও গ্রাহকদের কাছে জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ।

মিয়াকো কারেন্টের চুলার দাম

মিয়াকো ব্র্যান্ডের কারেন্টের চুলার দাম ১৫০০ টাকা থেকে ৫০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে। মিয়াকো চুলাগুলোতে সাধারণত সহজ ব্যবহারযোগ্য ডিজাইন, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা এবং কম বিদ্যুৎ খরচের সুবিধা থাকে। মিয়াকো এর চুলাগুলো সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যায় যা অনেকের কাছে আকর্ষণীয়।

মডেল দাম
Infrared Touch Cooker ATC-20E3 ৫৬০০ টাকা।
Infrared Cooker ATC-20T6 2000 W ৫২০০ টাকা।
Miyako Induction Cooker TC- MARBLE01 ৫৫০০ টাকা।
Miyako Induction Cooker TC- MARBLE-04 ৫৮০০ টাকা।
Miyako Induction Cooker TC- MARBLE-05 ৫৮০০ টাকা।
Miyako Infrared Cooker MDB-88 ৫০০০ টাকা।
Induction Cooker TC- Marble-07 ৫০০০ টাকা।

মিয়াকো এর কিছু জনপ্রিয় মডেল হলো Miyako Single Burner Electric Stove, Miyako Double Burner Electric Stove ইত্যাদি। মিয়াকো চুলাগুলোর মধ্যে রয়েছে শক্তিশালী হিটার, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং সেফটি ফিচার যা রান্নাকে সহজ এবং কার্যকর করে তোলে। তাছাড়া মিয়াকো চুলাগুলোর কম বিদ্যুৎ খরচও গ্রাহকদের কাছে আকর্ষণীয়।

অন্যান্য ব্র্যান্ডের কারেন্টের চুলার দাম

বাজারে আরও অনেক ব্র্যান্ডের কারেন্টের চুলা পাওয়া যায় যেমন: সিঙ্গার, পেনাসনিক, মিটসুবিশি ইত্যাদি। এদের দামও সাধারণত ১৫০০ টাকা থেকে ১০০০০ টাকার মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। এসব ব্র্যান্ডের চুলাগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ফিচার ও বৈশিষ্ট্য পাওয়া যায় যা ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন মেটাতে সক্ষম।

মডেল দাম
Osaka Inferred Hot Plate Portable Electric Stove 1500wt ১৫০০ টাকা।
Hawkins Gold Infrared Cooker- CMT-2201-inverter system ৩৭৫০ টাকা।
Hawkins Gold Induction Cooker 
৩৭৫০ টাকা।
Jaipan Induction Cooker Power Favorable ২২০০ টাকা।
Hawkins Gold, Infrared Cooker – 10 stages power setting- inverter system ৩৮০০ টাকা।
NOAH Smart Single Infrared Cooker ৩৬০০ টাকা।
Prestige gold Infrared Cooker- inverter technology ৩৮৫০ টাকা।
Sokany Brand Infrared Radiant Cooker 2200watts with SS handle ৩৫৫০ টাকা।
Bajaj Gold Infrared Cooker- CMT-2208- BAJ -inverter system ৩৭০০ টাকা।
Philips Induction HD4929/01 ৯০০০ টাকা।

উদাহরণস্বরূপ সিঙ্গার ব্র্যান্ডের চুলাগুলোর দাম ২০০০ টাকা থেকে ৮০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে এবং এসব চুলাগুলোর মধ্যে উন্নতমানের হিটার, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং সেফটি ফিচার থাকে। পেনাসনিক চুলাগুলোর দাম ৩০০০ টাকা থেকে ১০০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে এবং এদের মধ্যে উন্নত প্রযুক্তি এবং আধুনিক ডিজাইন রয়েছে। মিটসুবিশি চুলাগুলোর দাম ৪০০০ টাকা থেকে ৯০০০ টাকার মধ্যে হতে পারে এবং এসব চুলাগুলোতে উন্নতমানের হিটার এবং সেফটি ফিচার থাকে।

কারেন্টের চুলা কেনার সময় যা খেয়াল রাখতে হবে

কারেন্টের চুলা কেনার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত। প্রথমত চুলার ক্ষমতা এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা দেখে নেওয়া জরুরি। চুলার ক্ষমতা নির্ধারণ করে এটি কত দ্রুত তাপ উৎপন্ন করতে সক্ষম এবং তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রান্নার সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। দ্বিতীয়ত চুলার সাইজ এবং ডিজাইন দেখে নিতে হবে যাতে এটি আপনার রান্নাঘরের সাথে মানানসই হয়। বড় বা ছোট রান্নাঘরের জন্য উপযুক্ত সাইজের চুলা বেছে নেওয়া উচিত।

তৃতীয়ত ব্র্যান্ড এবং দাম যাচাই করা উচিত যাতে আপনি আপনার বাজেটের মধ্যে একটি ভাল মানের চুলা পান। চুলার দাম নির্ধারণে ব্র্যান্ডের মান এবং চুলার ফিচার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তাছাড়া সেফটি ফিচার এবং ওয়ারেন্টি সম্পর্কেও খেয়াল রাখা উচিত। সেফটি ফিচার যেমন অটো শাট ডাউন, ওভারহিট প্রটেকশন ইত্যাদি দেখুন যা দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা করবে। ওয়ারেন্টি সুবিধাও গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি চুলার গুণগত মান এবং স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে।

অনলাইনে কারেন্টের চুলা কেনার সুবিধা ও অসুবিধা

অনলাইনে কারেন্টের চুলা কেনার অনেক সুবিধা রয়েছে। প্রথমত বিভিন্ন ব্র্যান্ড এবং মডেল এক জায়গায় দেখে নেওয়া যায়। এটি আপনাকে বিভিন্ন অপশন থেকে সেরা পণ্য বেছে নিতে সাহায্য করে। দ্বিতীয়ত মূল্য তুলনা করা সহজ এবং অনেক সময় ডিসকাউন্ট ও অফার পাওয়া যায়। বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটে বিভিন্ন অফার এবং ডিসকাউন্ট থাকে যা আপনাকে সাশ্রয়ী মূল্যে পণ্য কেনার সুযোগ দেয়। তৃতীয়ত ঘরে বসে কেনাকাটা করা যায় যা সময় এবং শ্রম বাঁচায়। অনলাইনে কেনাকাটা করলে আপনাকে বাজারে গিয়ে কেনাকাটা করতে হয় না যা আপনার সময় এবং শ্রম বাঁচায়।

তবে কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন পণ্যটি সরাসরি দেখে কেনা যায় না এবং ডেলিভারি সময় বেশি লাগতে পারে। এছাড়া অনলাইনে কেনাকাটা করলে অনেক সময় পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় না এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকিও থাকে। তাই অনলাইনে কেনাকাটার সময় বিশ্বস্ত এবং নির্ভরযোগ্য সাইট থেকে কেনাকাটা করা উচিত।

উপসংহার

২০২৪ সালে কারেন্টের চুলার বাজার খুবই প্রতিযোগিতামূলক এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চুলা সহজলভ্য। সঠিক ব্র্যান্ড এবং মডেল বেছে নিতে হলে উপরের পরামর্শগুলো মেনে চলা উচিত। গুণগত মান এবং দাম অনুযায়ী সেরা কারেন্টের চুলা বেছে নিতে পারলে রান্নার কাজ আরও সহজ এবং আনন্দদায়ক হবে। কারেন্টের চুলার বিভিন্ন মডেল এবং ফিচার দেখে নিজের প্রয়োজন এবং বাজেট অনুযায়ী সঠিক চুলা নির্বাচন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক চুলা বেছে নিতে পারলে রান্নার অভিজ্ঞতা হবে আরও সুন্দর এবং সাশ্রয়ী।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *